স্বদেশ ডেস্ক: ফিফা প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনার এক দিনের সৌজন্য সফর বাংলাদেশে। এ নিয়ে পুরো দেশের ফুটবল সমর্থকদের মধ্যে একটু তো কৌতূহল। ফিফা বসের এ সংক্ষিপ্ত সফরকে অনেকেই ইতিবাচক হিসেবে নিচ্ছেন। বাংলাদেশের ফুটবল নিয়ে আশাবাদী ইনফান্তিনো ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গেও ঘণ্টাখানেক আলোচনা করেছেন। সঙ্গে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তাই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে দেশের ফুটবল। এ সফর থেকে কী আদায় করে নিতে পেরেছে বাংলাদেশ। একদিকে ফিফা প্রেসিডেন্ট নিজেই বাংলাদেশ ফুটবলের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখছেন। সঙ্গে ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করতে কিছু নির্দেশনাও দিয়ে গেছেন দেশের সর্বোচ্চ ফুটবল অভিভাবককে। বাফুফে বস ও সাফের প্রেসিডেন্ট কাজী সালাহউদ্দীনকে।
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দেশের ফুটবল উন্নয়নে কর্মপরিকল্পনা করে সেগুলো জমা দিতে বলেছেন ফিফা সভাপতি। বয়সভিত্তিক থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায়ে ফুটবল নিয়ে কাজ করতে বলেছেন। ফিফার কাছে সেগুলো পাঠানোর নির্দেশনাও দিয়েছেন তিনি। দেশের জনগণের মধ্যে তিনি যে উন্মাদনা দেখেছেন সেই জায়গা থেকে উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করে কোথায় কাজ করতে হবে সেটাও বাতলে দিয়েছেন ইনফান্তিনো। তবে এটা যে ফিফা সভাপতির সৌজন্য সাক্ষাৎ সেটাই আগেই বলে দিয়েছে বাফুফে। এখান থেকে লাভ-ক্ষতির চেয়ে আতিথিয়তার দিকেই নজর ছিল দেশের সর্বোচ্চ অভিভাবকদের। তবে ফিফা সভাপতির নির্দেশনা প্রসঙ্গে কাজী সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমাকে বলেনি যে ফেডারেশনের উন্নয়ন করতে হবে। আমাকে বলেছেন বলেছেন পরিকল্পনা করতে। এগুলো নিয়ে কাজ করতে। তখন ফিফা-সাফ এবং বাংলাদেশ একসঙ্গে কাজ করবে।’ সঙ্গে বাফুফে বস এও জানালেন তার অবশিষ্ট মেয়াদে এ পরিকল্পনাগুলো নিয়ে কাজ করা অসম্ভব, ‘আমার যে সময় বাকি আছে সভাপতি হিসেবে সেই সময়ের মধ্যে এগুলো নিয়ে কাজ করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।’
সম্প্রতি দেশের বয়সভিত্তিক দলগুলো সাফল্য পাচ্ছে। জাতীয় দলের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স আশার আলো দেখাচ্ছে। দেশের এ সাফল্যে রোমাঞ্চিত ফিফা সভাপতি। সাফল্যের অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের পাশে থাকার কথাও জানিয়েছেন তিনি। এদিকে তৃণমূল নয়, বরং জাতীয় দলে বেশি বিনিয়োগ করতে আগ্রহী সালাহউদ্দিন, ‘আপনি কিন্তু আগেও দেখেছেন বাফুফের সভাপতি হিসেবে আমি জাতীয় দলের জন্য বেশি খরচ করেছি। তখন আপনারা পছন্দ করেননি। ওই বিনিয়োগ করেছি বলেই আজকে রেজাল্ট আসছে। শুধু ন্যাশনাল টিমে করলে হবে না, জুনিয়রে করলে হবে না। এটা যৌথভাবে হতে হবে।’ দেশের বয়সভিত্তিক পর্যায়ে সাম্প্রতিক সফলতা সম্পর্কে ইনফান্তিনো আগেই খোঁজ পেয়েছেন ফিফার কার্যনির্বাহী কমিটি সদস্য মাহফুজা আক্তার কিরণের কল্যাণে। বয়সভিত্তিক ও মেয়েদের ফুটবলে উন্নয়নে জোর দেওয়ার কথা আগ্রহ ভরেই বললেন ইনফান্তিনো, ‘মেয়েদের ফুটবলে বিনিয়োগ করতে আমি উৎসাহিত করি। কেননা মেয়েদের ফুটবলে প্রতিদ্বন্দ্বিতা এখনও অতটা কঠিন নয়। ইউরোপে ছেলেদের ফুটবল যতটা কাঠামোবদ্ধ, মেয়েদের ফুটবল ততটা নয়। তাই মেয়েদের ফুটবলে তুলনামূলক দ্রুত সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর সুযোগ আছে। আর আমি নিশ্চিত বাংলাদেশ তা পারবে।’ বাংলাদেশের ফুটবলের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ দেখছেন ইনফান্তিনো। দেখছেন অপার সম্ভাবনা। বাংলাদেশ সফর শেষে ফিরে যাওয়ার আগে তিনি বলে গেলেন, ‘এখানে আমি যে উন্মাদনা দেখলাম, তাতে আমি মনে করি ফুটবলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।’ ফুটবলে যে অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে সেটা বেগবান করতে যেতে হবে তৃণমূল পর্যায়ে। কাজ করতে হবে বয়সভিত্তিক ফুটবলে। এমনটাই সবসময় বলে আসছেন দেশের ফুটবল বিশেষজ্ঞরা।